বিদায় ডন ভাই!
চ্যানেল আই থেকে গনভবণ! সাংবাদিকতা থেকে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর সামলানো। রাজস্মিক এক উস্থান! তবে বিদায়টা হলো মুখ ঢেকে, বির্তক সঙ্গী করে পর্দার আড়ালে। বলছি, প্রধানমন্ত্রী উপ প্রেস সচিব মুহাম্মদ আশরাফুল আলম খোকনের কথা। প্রধানমন্ত্রীর মিডিয়া উইংয়ের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ডিপিএস আশরাফুল আলম খোকনের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অধ্যায় শেষ। অক্টোবরে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পা ছুঁয়ে সালাম করে বিদায় নিয়ে এসেছিলেন খোকন। তখনই তাকে পদ থেকে সরিয়ে দেয়ার নিউজ প্রকাশ করেছিল করাপশন ইন মিডিয়া। ‘
যদিও আশরাফুল আলম খোকন দাবী করেছেন, উচ্চ শিক্ষার্থে দেড় বছরের ছুটি নিয়ে আমেরিকা যাবেন তিনি। অথচ,তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে শিক্ষা ছুটি অথবা দীর্ঘমেয়াদি ছুটি চাওয়া বা পাওয়ার কোন এখতিয়ারই নেই। নিয়মটা খোকন নিজেও ভালোই জানেন। তারপরও কেনো গত ১০ জানুয়ারী দেড় বছরের ছুটি চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে ছুটি চেয়েছেন খোকন।? সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছে করাপশন ইন মিডিয়া।
গতকাল সন্ধ্যা ৬ টা ৩০ মিনিটে আমেরিকার উদ্দেশ্যে নীরবে দেশ ছেড়েছেন খোকন। করাপশন ইন মিডিয়ার অনুসন্ধান বলছে, রাষ্ট্রের একটি গোয়েন্দা সংস্থার বিভাগীয় তদন্তে উঠে আসে খোকনের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগের প্রমাণ। নগদ কেলেংকারি, পাপিয়া ইস্যু, জিকেজির ডা. সাবরিনা ইস্যু ছাড়াও ডাক বিভাগের একটি বড় ধরনের দুর্নীতিতে সরাসরি নাম এসেছিল খোকনের। করাপশন ইন মিডিয়া যদি ভবিষৎতে ওই গোয়েন্দা রিপোটটি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করার প্রয়োজন অনুভব করে, তবে তা প্রকাশ করা হবে।
প্রধানমন্ত্রীর ডেপুটি সেক্রেটরি আশরাফুল আলম খোকনের আছে আলাদা ফ্যানবেজ,সর্মথক গোষ্ঠী। পিএমও‘র গোটা মিডিয়া উইংয়ের ভিতর সিন্ডিকেট বানিয়ে রাজত্ব করতেন খোকন। অন্য ডিপিএসদের এমনকি দপ্তরে কোন কোন সচিবকেও একপেশে করে রেখেছিলেন খোকন। সাংবাদিকদের নিয়েও বিশাল এক সিন্ডিকেট তৈরি করেছিলেন। খোকনের বিরুদ্ধে একটি গুরুতর অভিযোগ, জামাত শিবিরি পন্থী সাংবাদিকদের লালনপালন এবং গনভবণে প্রবেশের সুযোগ করে দেয়া।
রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জেলখাটা চ্যানেল ২৪য়ের সাংবাদিক জুনায়েদ শাহরিয়ার, জিটিভির প্রমাণিত শিবির মাইনুলের মত বেশ কয়েকজন বির্তকিতরা ছিল খোকনের আর্শিবাদপুষ্ট ও কাছের মানুষ। এন্টি আওয়ামী সাংবাদিকদের গনভবণে প্রবেশের সুযোগ করে দেয়ার সবচেয়ে বড় রুপকার ছিলেন খোকন। অথচ সোস্যাল মিডিয়া জামাত শিবির বিএনপির বিরুদ্ধে সবসময়ই সোচ্চার তিনি।
খোকনের প্রভাব আর প্রতাপ কাজিয়ে লাগিয়ে অনেক সাংবাদিক ফায়দা লুটেছেন,অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছেন,বাগিয়ে নিয়েছেন অনেক সরাকারী কাজ। বিদায় বেলায় বির্তক ঢাকতেই কিনা, নগদ কোম্পানির শেয়ারও বেঁচে দেন খোকন। অনেক চেষ্টা করেও শেষ পর্যন্ত চাকুরি বাঁচাতে পারলেন না তিনি।
আশরাফুল আলম খোকনের মত একজন হাইপ্রোফাইল ব্যক্তিকে দুর্নীতির দায়ে চাপ প্রয়োগ করে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। এটা চাউর হইলে তো সরকারের মাথা কাটা যাবে। আবার দুর্নীতির প্রশ্নে অটল শেখ হাসিনাও চান না তার দপ্তরে এমন দুর্নীতিবাজ থাকুক। তাই, এই উচ্চ শিক্ষার নাটকের মাধ্যমে খোকনের সম্মানজনক বিদায়ের পথ করে দিয়েছে পিএম অফিস।
যদিও বাংলাদেশ সরকারের ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী,আশরাফুল আলম খোকন এখনো ডেপুটি প্রেস সেক্রেটরি-১ হিসেবে কর্মরত আছেন। তবে করাপশন ইন মিডিয়ার অনুসন্ধান বলছে,আশরাফুল আলম খোকনের পদটি এখন শুন্য। ওই পদে আগামী মাস খানেকের ভিতর নতুন ব্যক্তিকে নিয়োগ দেয়া হবে। কয়েকদিনের ভিতর আশরাফুল আলম খোকন,ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে তার ফ্যান ফলোয়ারদের জানাবেন, স্কলারশীপের জন্য তিনি ছুটি না পাওয়ায় পদত্যাগ করেছেন। তারপর সুখে শান্তিতে আমেরিকায় বসবাস করবেন!??? প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় কিংম্বা মিডিয়া মহলে ডনের মতই প্রভাব খাটিয়েছেন,খোকন। তাই তাকে ডাকা হতো ডন ভাই বলে। তবে তার বিদায়টা ডনের মত নয় বরং খলনায়ক হিসেবে। ভালো থাকবেন ডন ভাই। বিদায়