যেভাবে মিডিয়া বন্ধু হয়ে উঠলেন রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো: শাহেদ
করোনার টেস্ট না করে ভূয়া রিপোর্ট দেয়া রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো: শাহেদ(প্রকৃত নাম) শাহেদ করিমের আরো একটা পরিচয় মিডিয়া বন্ধু। দেশের শীর্ষস্থানীয় মিডিয়ার টকশোগুলোতে নিয়মিত বিচরণ আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য মো: শাহেদের। শাহেদের ফেসবুকে জুড়ে দেশের শীর্ষস্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে ছবি। একাত্তর টিভির মোজাম্মেল বাবু,নইম নিজাম,অঞ্জন রায়,শ্যামল দত্ত,শাবান মাহমুদ সহ অনেকেই। ৫০০ কোটি টাকা আত্মসাৎতপর মামলায় জেলও খেটেছে শাহেদ।

চ্যানেল আইয়ের তৃতীয়মাত্রা,একাত্তরের টকশো,চ্যানেল ২৪,নাগরিক টিভি,নিউজ২৪, জিটিভি মোহনা সহ এই দেশের প্রায় সব টিভিতে শাহেদ নিয়মিত টকশো করেন। অথচ বছর ছয়েক আগে এই শাহেদ প্রথম জিটিভির টকশোর গেস্ট হিসেবে মিডিয়ায় আসেন। বড় অংকের টাকা দিয়ে বিভিন্ন চ্যানেলে টক শোর গেস্ট হিসেবে যেতে শুরু করেন। মিডিয়ার এই পরিচিতি কাজে লাগিয়ে আর সরকার দলের পক্ষে মিষ্টি মিষ্টি কথা বলে আওয়ামী লীগের নজরে আসে। মিডিয়ার আওয়ামী বন্ধুদের সহায়তায় বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে নাম লেখায়!

অথচ এই শাহেদের নামে জালিয়াতি অর্থ আতৎসাত জমি দখল, চাকুরি দেয়ার নামে প্রতারণা, অবৈধ হাসপাতাল পরিচালনা সহ ৩২ টি মামলা চলে। এই শাহেদের আছে কয়েক কোটি শো কোটি টাকার সম্পদ। বিভিন্ন টিভি এবং মিডিয়ার মাথাগুলোকে কিনে রেখেছে এই শাহেদ। একাত্তর টিভির মোজাম্মেল বাবুর ঘরোয়া গেট টুগেদার পার্টিতেও যেতেন নিয়মিত।
গত মার্চের শেষের দিকে শাহেদের কুকর্ম ও বাটপারির খবর প্রকাশিত হলে অঞ্জন রায় ওনার সাফাই গেয়ে স্ট্যাটাস দিয়েছেন। ৬ হাজার মানুষকে ভূয়া রিপোর্ট দেয়ার পর মো: শাহেদের মিডিয়া বন্ধুরা চুপ রয়েছেন। এমনকি তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা মিডিয়াগুলোতেও শাহেদের কুকর্মের তথ্যগুলো ঠিকমত প্রকাশ করা হচ্ছে না। মো: শাহেদ নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা বলে পরিচয় দেন। ব্যক্তিগত জীবনে দুইটা বউ। ওনার পরের বউ কোন একটা মিডিয়ার প্রেজেন্টার। শাহেদ নিজেও একটা পত্রিকা খুলেছে!

শাহেদের সাথে সবসময় ২ জন গানম্যান থাকে। পুলিশের বিশেষ ব্রাঞ্চ এসবির আদলে তাদের কালো জ্যাকেট পরা থাকে,হাতে থাকে শটগান ওয়াকিটকি। তার বউয়ের নিরাপত্তায় আরো দুইজন গানম্যান থাকে, বেশভূষা এসবি সদস্যদের মত। গাড়িতে ফ্ল্যাগ স্টান্ড লাগানো থাকে! এসব খবর শাহেদকে যারা চেনে, তারা আগে থেকেই জানতো।
মিডিয়ায় অনেকের সাথেও প্রতারণা করেছে এই শাহেদ। একটি তদবীর করার নাম করে এক নারী সাংবাদিকের কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছে বাটপার শাহেদ। আমলাদেরকে প্রমোশন পাইয়ে দেয়ার কথা বলেও প্রতারণা করে আসছে এই শাহেদ।

আমরা জানতে চাই,মিডিয়ায় যেসকল সাংবাদিক মো: শাহেদকে প্রমোট করেছে,তারা ঠিক কত টাকা দালালিতে মাথা বিক্রি করেছেন? কত টাকায় বিক্রি হয়ে এই রকম একটা বাটপারকে বন্ধু বানিয়েছেন। মো: শাহেদের কাছ থেকে যেসকল সাংবাদিকরা কমিশন পেতেন তাদের ছবি শাহেদের ওয়ালেই আছে।

সেই সব মিডিয়া মালিক এবং চেতনার সাংবাদিকদের কে প্রশ্ন করুন…এই বাটপারকে কেনো তারা এতো দিন ভালো মানুষের সার্টিফিকেট দিয়ে আসছিল। আমরা এটাও জানতে চাই,,প্রতি মাসে কোন কোন মিডিয়া মো: শাহেদের কাছ থেকে কত টাকা নিতো?